"শরিয়তের দৃষ্টিতে ভাই-বোনের মতো বন্ধুত্ব: কি বলছে ইসলাম?"
একটি মেয়ে এবং একটি ছেলের মধ্যে যদি সম্পর্ক ভাই-বোনের মতো হয়, যেখানে কোনো খারাপ কথাবার্তা না হয় এবং একে অপরকে স্বাভাবিকভাবে সম্বোধন করা হয়, তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে এই সম্পর্ক কীভাবে বিবেচিত হবে? আল্লাহর কিতাব এবং হাদীসের আলোকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। ইসলামে মুমিন-পুরুষ এবং মুমিন-নারী একে অপরকে ভাই-বোন হিসেবে সম্বোধন করতে পারবেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর কুরআনে বলেন, "মুমিনরা পরস্পর ভাই-ভাই" (সূরা হুজুরাত ১০)। তবে এর মানে এই নয় যে, তারা একে অপরকে মাহরাম হিসেবে গণ্য করতে পারবে। মাহরাম হওয়ার অর্থ হলো, তারা একে অপরকে বিয়ে করতে পারবেন না এবং তাদের মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যেমন অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বা দেখা-সাক্ষাৎ। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, "তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পরপুরুষের সাথে কোমলভাবে কথা বলো না, যাতে তাদের অন্তরে কোনো দুর্বলতা সৃষ্টি হয়" (সূরা আহযাব ৩২)। তাই, ভাই-বোনের মতো সম্পর্ক থাকলেও, তাদের মধ্যে কোনো আকর্ষণ বা অবাঞ্ছিত সম্পর্কের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাহরাম সম্পর্কের মধ্যে এমন ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত, যাদের সঙ্গে বিয়ে করা বা দেখা করা ইসলামি পরিভাষায় বৈধ। ইসলামে, রক্ত সম্পর্ক, স্তন্যদানের সম্পর্ক এবং বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে একটি পুরুষ এবং নারী একে অপরের মাহরাম হন। কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী, একজন পুরুষের জন্য ১৪ জন মাহরাম এবং নারীটির জন্যও ১৪ জন মাহরাম নির্ধারিত রয়েছে। এই ১৪ জনের মধ্যে যারা মাহরাম, তাদের সঙ্গে দেখা করা জায়েজ, পর্দা ফরজ নয়, তবে বিয়ে করা যাবে না। তবে স্ত্রী জীবিত থাকাকালে তার বোনের সঙ্গে বিয়ে করা বা দেখা করা নিষেধ। শরিয়ত অনুযায়ী, এসব সম্পর্কের বাইরে বিয়ে বা অপ্রয়োজনীয় যোগাযোগের মাধ্যমে কোনো গোনাহ হতে পারে।
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ এ ১০:০৭ PM