রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে, বন্যার আতঙ্কে জনগণের ঘরবাড়ি সরানো হচ্ছে
রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বাড়তে থাকায় বন্যার আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চর এলাকা থেকে গবাদিপশুসহ বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ভেসে যাচ্ছে ফসলি জমি। পদ্মা নদীর ডান তীরে ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া চরের কয়েকটি গ্রামে এক সপ্তাহ ধরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাকা এবং নারায়ণপুর এলাকায়ও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এখানকার প্রায় ছয় হাজার পরিবার বর্তমানে পানিবন্দী অবস্থায় আছে। নাটোরের লালপুর উপজেলার কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরের বাসিন্দাদের অনেকেই ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরানোর কাজ শুরু করেছেন। কেউ কেউ সবকিছু নৌকায় তুলে নিয়ে চলে আসছেন অন্য পারে, নতুন ঠিকানা খুঁজছেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রেলবাজার ঘাটে এমন বেশ কিছু নৌকা এসে ভেড়ে। নৌকাগুলোর মধ্যে গবাদি পশু, ধান এবং ঘরের চাল, টিনের ছাউনি, আসবাবপত্র নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা। চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চর বয়ারমারি গ্রামের আসগর আলী বলেন, প্রতিবছরই তাঁদের গ্রাম পদ্মায় ভাঙছে। তিনি ইতোমধ্যে ১৫ বিঘা কৃষিজমি হারিয়েছেন এবং ঘর ছয়বার সরিয়েছেন। এবারও নদীর ভাঙন বাড়ির কাছে চলে আসার কারণে তাঁরা চলে আসলেন অন্য পারে। চর আমতলা খাসমহলের বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন জানান, গত কয়েকদিন ধরে নদীর পানি বাড়ায় তাদের এলাকার কিছু রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। টমেটো ও ধানের খেতও ডুবে গেছে। চর বয়ারমারি গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়ি সরিয়ে নিতে হয়েছে। এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার জেলেপাড়া গ্রামে তীব্র নদীভাঙন চলছে এবং একটি সেতুও ভেঙে গেছে। স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলাতুলি ও নারায়ণপুর ইউনিয়নের চার কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন চলছে। গত বছরও এখানে দুই শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। এবারের ভাঙনে বাড়িঘর, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নেও নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে, যেখানে প্রায় ২৫০টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।
প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ এ ৫:১৯ PM